কবিরহাটে আওয়ামীলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধসহ আহত-৪

নোয়াখালীর কবিরহাটে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় আওয়ামীলীগ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরে মধ্যে মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ এবং গুলির ঘটনা ঘটেছে। এসময় বাহার উদ্দিন (৪৭) নামের এক আওয়ামীলীগ নেতা গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের ৪জন আহত হয়েছে। এসময় বসতঘর ও দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে উপজেলার বাটইয়া ইউনিয়নের শ্রীনর্দি চৌরাস্তা এলাকায় এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষে আহতরা হচ্ছেন, বাহার উদ্দিন, তারেক আমিন জনি, রুবেল হোসেন ও টিপু। গুলিবিদ্ধ বাহারকে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অপর আহতরা কবিরহাট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আহত বাহার উদ্দিন বাটইয়া ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড আ’লীগর সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বাহার উদ্দিন গ্রুপ ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক আমিন জনি গ্রুপের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় একটি দোকানে বাকি নেওয়াকে কেন্দ্র করে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটে। এসময় বসতঘর ও দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে।
সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গুলিবিদ্ধ বাহার উদ্দিন অভিযোগ করে বলেন, দলীয় কোন্দল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ নেতা তারেক আমিন জনি ও শাকিল গ্রুপের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। সকালে শ্রীনন্দি চৌরাস্তা দোকান ঘর এলাকায় তাদের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া শুরু হলে শাকিলের পক্ষের কয়েকজন আমার বাড়ির উপর দিয়ে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। জনি তাদের পিছন থেকে অস্ত্র হাতে ধাওয়া করে আমার বাড়ীতে প্রবেশের চেষ্টা করে। এসময় জনি ও তার লোকজনের গতিরোধ করতে গেলে জনি আমার বাম পায়ে গুলি এবং আমার বসত ঘরে ভাঙচুর করে পালিয়ে যায়। তিনি আরও অভিযোগ করেন, বাটইয়া ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান’র মদদে ছাত্রলীগ নেতা জনি এলাকায় দেরাচ্ছে সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করবেন বলেও জানান তিনি।
ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তারেক আমিন জনি তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, বাহার ও শাকিলের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী আমার বসত ঘরে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এসময় তারা আমার স্বজন রুবেল ও টিপুকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। ঘটনাটি দেখে আমি বাধা দিতে গেলে বাহার আমার দিকে ধারালো অস্ত্র নিয়ে এগিয়ে আসে এবং শাকিল আমাকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে বাহারের পায়ে গুলি লাগে।
বাটইয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বলেন, বাহার চুরি, ডাকাতি ও সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত। সে সকালে লোকজন নিয়ে হামলা চালিয়ে ছাত্রলীগে নেতা জনিকে পিটিয়ে ও আরও দুইজনকে কুপিয়ে জখম করেছে।
কবিরহাট উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি জহিরুল ইসলাম রিয়াদ বলেন, বাহার ও শাকিলের লোকজন সকালে অর্তকিতভাবে এলাকার সাধারণ ব্যবসায়ী ও রিকশা চালকদের উপর হামলা চালায়। কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর করে তারা। এসময় ছাত্রলীগ নেতা জনি ও স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপরও হামলা চালায়। পরে হামলাকারীরা সন্ত্রাসী বাহারের বাড়ীতে গিয়ে অবস্থান নেয় এবং বাহারের বাড়ী থেকে জনিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুঁড়লে সামনে থাকা বাহার গুলিবিদ্ধ হয়।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. সৈয়দ মহিউদ্দিন আব্দুল আজিম বলেন, পায়ের উপরের অংশে গুলবিদ্ধ অবস্থায় বাহার উদ্দিন নামের একজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির্জা মো. হাছান বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও দোকানে বাকি নেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটেছে বলে শুনেছি। তবে ঘটনায় কোন পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।