মাইজদীতে জেলা যুবলীগ নেতা মঞ্জুর অফিসে গুলি
নোয়াখালী জেলা যুবলীগের জনপ্রিয় যুগ্ম আহবায়ক নাজমুল আলম মঞ্জুর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের অফিস লক্ষ্য করে গুলি করেছে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা। শনিবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে নোয়াখালীর জেলা শহর মাইজদীতে জেলা জজ কোর্ট ও নোয়াখালী প্রেসক্লাবের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত রেডক্রিসেন্ট মার্কেটের নিচতলায় তাঁর অফিস লক্ষ্য করে খুব কাছ থেকে গুলি ছোড়ে মটরকাইকেল আরোহী সন্ত্রাসীরা।
এসময় অফিসে না থাকায় এযাত্রায় প্রাণে বেঁচে যান মঞ্জু। তবে; গুলিবর্ষণের পরবর্তী সময়ে গালিগালাজ ও চিৎকার চেচামেছি করে আতংক সৃষ্টি কর সন্ত্রাসীরা। খবর পেয়ে পুলিশ সিসি টিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে নিলেও কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। প্রসঙ্গতঃ একই অফিসে নাজমুল আলম মঞ্জু ছাড়াও তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এন.আলম এন্টারপ্রাইজের অপর অংশীদার এবং সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ও নোয়াখালী শহর যুবলীগের আহ্বায়ক নুর আলম ছিদ্দিকি রাজুও বসেন।
এদিকে আদালতপাড়ার মতো একটি সংরক্ষিত এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজির ঘটনার পর পুরো জেলা শহর জুড়ে আতংক এবং সমালোচনার ঝড় বইছে। প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতৃত্বের প্রশ্রয় ছাড়া আদালত পাড়ায় এমন ঘটনা ঘটানোর দুঃসাহস কেউ করতো না- এমন কথা ফিরছে মানুষের মুখে মুখে। সিসি টিভি ফুটেজের সুত্র ধরেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে না পারার কারণে এটি আরো বেশী চাউর হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে শহরে আসলে কতো অস্ত্র আছে। ইতোপূর্বে জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিন শহরে প্রকাশ্যে অস্ত্রবাজির ফুটেজ ছড়িয়ে আছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে।
যুবলীগ নেতা মঞ্জু জানান, ঘটনার কিছুক্ষণ আগেই তিনি অফিস বন্ধ করে বাসায় যান। বাসায় যাওয়ার পর পরই অফিস এলাকা থেকে তাকে ফোন করে জানানো হয় ৮-১০টি মোটরসাইকেল যোগে এসে দুর্বৃত্তরা তার অফিসে এলোপাতাড়ি গুলি করে চলে যায়। এ সময় দুর্বৃত্তরা তার নাম ধরে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে এবং চিৎকার অফিস এলাকায় ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে। তবে কে বা কারা এমন ঘটনা ঘটিয়েছে তা তিনি বলতে পারেননি।
সরেজমিনে গিয়ে এবং স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, এত বেশি পরিমানে গুলি করা হয়েছে, যা অফিসের সাটার ভেদ করে অফিসের ভিতরে দেয়ালে ছিদ্র করে ফেলে। এ সময় মঞ্জু অফিসে থাকতেন নিশ্চিত গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যেতেন। পুলিশ প্রশাসনের নাকের ডগায় এমন ঘটনায় আতংকিত হয়ে পড়েন স্থানীয়রা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাম্প্রতিক সময়ে জেলা শহরে অস্ত্রের ব্যাবহার বেড়েছে কোন কোন প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতার মদদে। এসবই পুলিশের অজানা নয়, কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের রাজনৈতিক হাওয়া বুঝে পুলিশ নিজেদের এসব ঝামেলা থেকে আলাদা রাখতে চায়। শনিবার রাতের এই হামলাকারীরা শহরের নাকি ভাড়া করা বহিরাগত অস্ত্রধারী দ্রুত সিসি টিভির ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নিলেই সবাই জানতে পারবে।
এনিয়ে জানতে চাইলে সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নবির হোসেন জানান, ঘটনার পর পরই তিনি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং মঞ্জুর অফিসে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলেও জানান।