ওজনপার্কে তিন বাংলাদেশির ক্যাবে দুবৃত্তের হানা

নিউইয়র্ক সিটির কুইন্সের ওজনপার্কে তিন বাংলাদেশির ক্যাবে (টিএলসি গাড়ি) হানা দিয়েছে দুবৃত্তরা। গাড়ির পাশের গ্লাস ভেঙ্গে দরজা খুলে ভেতরে প্রবেশ করে এসময় লুটপাটের উদ্দেশ্যে সবকিছু তছনছ করে ফেলে তারা। গত শনিবার রাতের কোন একসময় ওজনপাকের ১০১ এভিনিউতে ৮২ স্ট্রিট থেকে ৮১ স্ট্রিটের মাঝখানে ডা: নাহারের চেম্বারের সামনে পার্কিং করা গাডিগুলোতে এই ঘটনা ঘটে। তবে; একইস্থানে পার্কিং করা সাধারণ গাড়ি গুলো অক্ষত ছিলো। 

রোববার দুপুরে গাড়ির মালিকরা বিষয়টি দেখতে পেয়ে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মালিকরা বলছেন এটা বিদ্বেষপ্রসূত হানা। সম্প্রতি একই এলাকায় তাঁরা একাধিকবার এই ঘটনার শিকার হয়েছেন। শুধুমাত্র বাংলাদেশীদের টিএলসি গাড়িতেই এই ঘটনা ঘটে, অন্য গাড়িতে নয়। ঘটনার পর খবর দিলে পুলিশ আসে কিন্তু প্রতিকার হয়না। ওজনপার্কে বাংলাদেশীদের বসতি প্রতিনিয়ত বিস্তার লাভ করায়ও এই বিদ্বেষপ্রসূত এ হামলাগুলো ঘটতে পারে।  

ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী একজন বাসিন্দা জানান, রোববার সকালে তিনি দেখতে পান চারটি টিএলসি গাড়ির ডান পাশের পেছনের দরজার কোনায় ছোট কাঁচটা ভাঙ্গা। সবগুলো গাড়ির ভেতরে তছনছ করা। অথচ আগেপিছে আরো কার এবং জিপ গাড়ি পার্কিং করা ছিলো কিন্তু সেগুলো অক্ষত ছিলো।  

ক্ষতিগস্ত গাড়ি মালিক আব্দুল বাতেন জানান- শনিবার রাত ৯টার দিকে তিনি টয়োটা ক্যাম্বরি গাড়িটি পার্কিং করে যান। রোববার দুপুরে পরিচিত একজন গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা দেখে তাঁকে খবর দেন। দুবৃত্তরা কাঁচ ভেঙ্গে দরজা খুলে গাড়িতে প্রবেশ করে কাগজপত্র, এয়ার পাইপ এবং চালকের পেছনে প্রতিস্থাপন করা করোনা প্রতিরোধক শেডটি তছনছ করে ফেলে। 

তিনি জানান- ৫ মাস পূর্বে একই কায়দায় ৯৭ এভিনিউ ও ৮১ স্ট্রিটের কোনায় বাসার সামনে পার্কিং করা অবস্থায় গাড়িতে একই কায়দায় লুটতরাজের শিকার হন তিনি। তখন নগদ টাকা ও মূলযবান জিনিসপত্র খোয়া গিয়েছিলো। তখন পুলিশও এসেছিলো, কিন্তু কোন কিনারা হয়নি আজও। 

মো: কাওসার দীর্ঘদিন ধরে নিউইয়র্কের ব্রংকস্ েবসবাস করতেন। ওজনপার্কে বিপুল সংখ্যক সিলেটিসহ বাংলাদেশীদের বসবাস তাই সম্প্রতি এখানে এসেছেন। তিনিও শনিবার রাতে বাসার সামনে গাড়ি পার্কিং করে গিয়েছিলেন। রোববার দুপুর  ২টার দিকে বাসা থেকে বেরিয়ে দেখেন গাড়ি কাঁচ ভাঙ্গা। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন এসব ঘটনা বিদ্বেষ থেকে। 

ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ির মালিক মুনির বলেন তার রেব-ফোর গাড়িটি একই কায়দায় গত তিন বছরে ৫বার ভাংচুরের কবলে পড়েছে। তন্মধ্যে শনিবার রাতের ঘটনাসহ সম্প্রতি একই স্পটেই হয়েছে তিনবার। রোববার সকালে তিনি দেখতে পান গাড়ির কাঁচ ভাঙ্গা এবং ভেতরের করোনা প্রতিরোধক শিল্ডটি ভেঙ্গে তছনছ করে ফেলেছে। পরে তিনি গাড়ির কাঁচ বদল করে নেন। প্রথম দিকে পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন, কোন ফল না পাওয়ায় এখন বলেননা। 

প্রসঙ্গত: ওজনপার্কে বাংলাদেশীদের বসতি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। একইসাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্বেষপ্রসূত অপরাধও। করোনার প্রকোপের কারণে এসব কিছুটা কম ছিলো। এদিকে নিয়মিত পুলিশের টহল, কমিউনিটি নেতৃবৃন্দের সাথে পুলিশের আন্তঃযোগাযোগ বৃদ্ধি  এবং স্থানীয়ভাবে সিটিলাইন কমিউনিটি পেট্রোল’র সদস্যদের ব্যাপক নজরদারির পরও বিক্ষিপ্ত এসব ঘটনায় কমিউনিটিতে উদ্বেগ বাড়ছে। 

মন্তব্য লিখুন :