মালিকানাসহ উপহারের ঘর পেয়ে খুঁশি সহায়-সম্বলহীন পরিবারগুলো

স্বামী আর তিন সন্তান নিয়ে কাজীর টেকে’র খুপড়ি ঘরে বসবাস ছিলো আমেনা বেগমের। সরকারি খাস জমিতে বসবাসের সময় কখন উচ্ছেদ করে এমন চিন্তা তাড়া  করে ফিরতো সবসময়। কারণ; জমির মালিক তিনি নন। অথচ; এখন মালিকানা দলিলসহ পাকা ঘর পেয়েছেন। মুজিববর্ষ উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসাবে জায়গাসহ ঘর প্রাপ্তি তাঁকে অবাক করেছে। নিঃস্ব মানুষ, এখন আমি জায়গাসহ ঘরের মালিক এরচে বড় আরকি ! এমন পরিতৃপ্তির অভিব্যাক্তি তাঁর। 

নোয়াখালী সদর উপজেলার ধর্মপুর ইউনিয়নের দুই একর জায়গার আশ্রয়ণ প্রকল্পে মালিকানা স্বত্বসহ প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে এখন আমেনাদের মতো একসময় সহায় সম্বলহীন ২৪ পরিরবারের বসবাস। পাকা ঘর, বিদ্যুৎ, বিশুদ্ধ পানি, খেলার মাঠ আর কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়ায় খুশি এসব পরিবার। 

ধর্মপুর আশ্রায়ন প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, কিছুদিন আগেও যে মায়ের ভাসমান জীবন ছিলো ঘরের দাওয়ায় বসে সেই মা এখন মেয়ের চুল বাঁধছেন। খেলছে শিশুরা, পড়ছে নিজেদের ঘরে বসে। বারান্দায় দোলনায় ধুলছে ছোট্ট শিশু। ছোট্ট হাঁস-মুরগীর খোয়াড় আর আঙিনায় সব্জিচাষ। নিজেদের বাড়িতে গ্রামীণ পরিবেশে পরিকল্পিত বসবারের সুযোগ পেয়ে আমেনার মতো আপ্লুত এখানাকার পরিবারগুলো। অবহেলিত শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে নেয়া নানা পদক্ষেপ খুশির গাঢ় ছাপ ফেলেছে শিশুদের মনেও।

এদিকে উপহারের পাশাপাশি সরকারের পক্ষ থেকে পরিবারগুলোকে আয়মূলক কাজের প্রশিক্ষণও দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রশাসন। শুধু যে ঘর পেয়েছে তাই নয়,গত কুরবানি ঈদে এসব আশ্রয়ণ প্রকল্পে সরকার ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উদ্যোগে গরু জবাই করে গোশতও দেয়া হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে-একইভাবে জেলায় ৯টি উপজেলায় ২০ একর সরকারি জায়গা দখলমুক্ত করে প্রকল্পের অধীনে নির্মিত ১ হাজার ২৮৭টিঘর মালিকানা দলিলসহ ইতোমধ্যে ইতিমধ্যে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে আশ্রয়হীনদের। ধর্মপুর আশ্রয়ন প্রকল্পকে মডেল হিসেবে ধরে অন্যান্যগুলোতেও নানা উদ্যোগ গ্রহন করেছে জেলা প্রশাসন। ধর্মপুর আশ্রায়ন প্রকল্পের বাসিন্দাদের মতোই ঘর পাওয়ায় খুশি নোয়াখালীর নয়টি উপজেলায় মুজিববর্ষে উপহারের ঘর পাওয়া পরিবারগুলো। 

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান বলেন- মুজিববর্ষের উপহার হিসাবে ১ হাজার ২৮৭টি পরিবারের মাঝে মালিকানাসহ ঘর হস্তান্তর করা হয়েছে। প্রকল্পের মানুষদেরসমাজের মুলধারাতে যোগ করতেই, নানা উদ্যোগ  নেওয়া হয়েছে। সরকারের এই মহতি উদ্যোগের সুফল এবং প্রকল্পের বাসিন্দাদের উন্নয়নে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজ হিতৈষীরা এগিয়ে আসার আহবান জানান তিনি।

মন্তব্য লিখুন :