আওয়ামী লীগের বিবাদ
কোম্পানীগঞ্জে পথচারীসহ গুলিবিদ্ধ নয়
-60b2e87080732.gif)
নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে আওয়ামী লীগের বিবদমান কোন্দলে আবারো গুলির ঘটনা ঘটেছে। শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বসুরহাট পৌর এলাকার ৯নং ওয়ার্ডের পৃথকস্থানে এই গুলির ঘটনা ঘটে। এতে পথচারীসহ অন্তত ৮জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে জানা গেছে। এনিয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে পুরো কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায়। যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশংকা করছেন স্থানীয়রা।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় গুলির ঘটনায় প্রতিপক্ষের লোকজনের অর্তকিত হামলায় নিজের কয়েকজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছে দাবী করছেন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা। কিন্তু মির্জার এমন অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁরই ভাগিনা মঞ্জু দাবী করেন- নিজেদের গুলিতে নিজেরা গুলিবিদ্ধ হয়ে এখন অন্যের ওপর দায় চাপাচ্ছেন মির্জা।
ভাগবাটোয়ারা নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় আর পারিবারিক রাজনীতির কানামাছি খেলায় বারবার গোলাগুলির ঘটনা ঘটলেও অবৈধ অস্ত্রগুলো রয়ে যায় ধরাছোয়ার বাইরে। ইতোমধ্যে সাংবাদিক মুজাক্কির এবং আওয়ামী লীগ কর্মী আলাউদ্দিন খুন হয়েছেন আওয়ামী লীগের বিবাদে।
শনিবার সন্ধ্যায় আহতরা হচ্ছেন, ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন (৪৭), ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল আহমেদ জিসান (২৩), সবুজ মিয়া (৪০), রুহুল আমিন সানি (৩০), দেলোয়ার হোসেন (২৮), পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের দেলোয়ার হোসেন সুমন (২৭), চরকাঁকড়া এলাকার দিদার হোসেন (৩৫), মাঈন উদ্দিন কাঞ্চন (৪২) ও পথচারী নওশাদ (৩৮)। গুলিবিদ্ধদের মধ্যে ৮জন বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জার অনুসারী বলে জানা গেছে। এদের মধ্যে কাঞ্চন, সানি ও সবুজকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়েছে। বাকীরা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার বসুরহাট বাজারে মিছিল করে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বাদলের সমর্থকরা। এর পাল্টা কর্মসূচীর অংশ হিসেবে শনিবার মাগরিবের নামাজের পর বসুরহাট বাজারে মিছিল করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল মেয়র আবদুল কাদের মির্জার সমর্থকরা। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হঠাৎ করে ৯নং ওয়ার্ড হাজীপাড়া, আদর্শপাড়া ও শান্তিপাড়া এলাকায় গুলির শব্দ শুনা যায়।
৯নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, মেয়র মির্জার সমর্থনে মিছিলে অংশগ্রহণ করতে স্থানীয় মওদুদ আহমদ প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একত্রিত হওয়ার জন্য হাজীপাড়া এলাকায় থেকে নেতাকর্মীদের নিয়ে তিনি বের হন । কিছুক্ষণ পর কয়েকটি মোটরসাইকেল যোগে বাদলের সমর্থকরা এসে এলোপাতাড়ি গুলি করে পালিয়ে যায়। এতে বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়।
ওয়ার্ড যুবলীগের সাবেক সভাপতি নজরুল ইসলাম বলেন, ৯নং ওয়ার্ড থেকে মিছিলে যোগ দিতে বসুরহাট বাজারে যাওয়ার পথে ১৫-২০টি মোটরসাইকেল যোগে বাদলের লোকজন তাঁদের ওপর গুলি ছুঁড়ে।
আবদুল কাদের মির্জা জানান, শুক্রবার বাদল ও মঞ্জুর লোকজন বাজারে মিছিল করেছিল তাতে কেউ বাধা দেয়নি। কিন্তু আজ মিছিলে আসার পথে তাদের লোকজন মোটরসাইকেল যোগে আমার সমর্থকদের ওপর হামলা চালিয়ে অন্তত ১৫জনকে গুলিবিদ্ধ করেছে। এ হামলা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি কমিশনার ভূমি ও ওসির সামনে হয়েছে বলে তিনি দাবী করেন। আগামী ২৪ঘন্টার মধ্যে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন মির্জা। অন্যথায় স্থানীয়দের নিয়ে তিনি আন্দোলন শুরু করার হুমকি দেন।
মির্জার অভিযোগ অস্বীকার করে তাঁর ভাগিনা মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু বলেন, মিজানুর রহমান বাদল ঢাকাতে, আমি লোকজন নিয়ে নিজ বাসায় থাকি, অনেকদিন বাসা থেকে বের হচ্ছিনা। আমার বাসার সামনে পুলিশ আছে। কাদের মির্জার লোকজন মিছিল করতে গিয়ে নিজেদের গুলিতে নিজের আহত হয়েছেন।
কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক আবু নাছের জানান, ছররা গুলিতে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ৭জন হাসপাতালে আসার পর তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জেনারেল হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি মীর জাহেদুল হক রনি জানান, ৯নং ওয়ার্ডে কাদের মির্জার অনুসারীদের মিছিল করতে চাইলে প্রতিপক্ষরা গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করা হবে।